ঢাকাবুধবার , ৬ এপ্রিল ২০২২

থমকে আছে মহাসড়কে পলিমার বিটুমিনের ব্যবহার কার্যক্রম

এপ্রিল ৬, ২০২২ ১২:১৭ অপরাহ্ণ । ২৩৪ জন

২০১৯ সালের জুলাইয়ে ৭৯৩ কোটি টাকার মহাসড়ক সংস্কার-প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে সড়কটির সংস্কারের জন্য এই ব্যয় ধরা হয়েছে। 

পলিমার মডিফাইড বিটুমিন আমদানির পর দেশীয় ল্যাবে পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু দেশে এ ধরনের ল্যাব বা প্রযুক্তির কোনোটাই নেই। এই বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে পলিমার মডিফাইড বিটুমিন ব্যবহার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেরামতের প্রকল্প নেওয়া হয়। ফলে টেস্টিং জটিলতায় তিন বছর আগে নেওয়া প্রকল্পের তেমন অগ্রগতি নেই।

মহাসড়ক আরও টেকসই করার জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হবে এই বিশেষ ধরনের বিটুমিন—পলিমার মডিফাইড বিটুমিন (পিএমবি)।

২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার মহাপরিকল্পনা হাতে নেয় সরকার। ওই সময় বাজেট ধরা হয় ১,৬৯৯ কোটি টাকা। এক দশক পর ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয় ১৯২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই মহাসড়ক নির্মাণের কাজ। খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৬০০ কোটি টাকা। তবে নির্মাণের সাত মাসের মধ্যেই সড়কটিতে দেখা দেয় গর্ত আর খানাখন্দ। এর জন্য দায়ী করা হয় ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণ-প্রক্রিয়া আর অতিরিক্ত ভারবাহী যানবাহনকে।

এরই প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ৭৯৩ কোটি টাকার এই সংস্কার-প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে সড়কটির সংস্কারের জন্য এই ব্যয় ধরা হয়েছে। মহাসড়কে তৈরি হওয়া গর্ত সংস্কার না করেই বিদ্যমান সারফেসের উপর শুধুমাত্র ৫০ মিলিমিটার পুরু করে বিটুমিন বসানোর পরিকল্পনা ছিল অনুমোদিত প্রকল্প প্রস্তাবে।

পলিমার মডিফাইড বিটুমিন আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী, পণ্য খালাসের আগে তার গুণগত মান বিএসটিআই, বুয়েট বা ইষ্টার্ণ রিফাইনারি থেকে পরীক্ষা করার বিধান রয়েছে।

এখানেই ঝামেলার সূত্রপাত।

বিএসটিআই, বুয়েট বা ইষ্টার্ণ রিফাইনারি—কোথাও আমদানিকৃত এই বিশেষ বিটুমিনের মান যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেই।

একমাত্র সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ছিল, কিন্তু পরীক্ষা করার জন্য তাদের কাছে কোনো টেকনিশিয়ান ছিল না।

এ জটিলতায় বাস্তবায়ন কাজও আটকে ছিল। এই পরিস্থিতিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পলিমার আমদানিতে ছয় মাসের জন্য শর্ত শিথিল করা হয়। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে অ্যাসফল্টের দাম বেড়ে যায়।

কিন্তু এ সিদ্ধান্ত নিতে দু-বছর লেগে গেল কেন?

প্রকল্প পরিচালক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (আরএইচডি) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘টেন্ডারিং ও কার্যাদেশ জারির প্রক্রিয়ায় সময় লেগেছে। আমরা কার্যাদেশ দিয়েছিলাম ২০২১ সালের ২৮ মার্চ। তারপর ল্যাব না থাকায় আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়।’ এছাড়া কোভিডের কারণেও বিলম্ব হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ পর্যন্ত চাহিদার মাত্র ৩০ শতাংশ বিটুমিন আমদানি করা হয়েছে।

অন্যদিকে, কারিগরি ত্রুটির কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মহাসড়কের ‘আনডিউলেশন’ অপসারণ করতেও ঠিকাদারদের সমস্যা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না। এ কারণে প্রকল্পের মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সুনীতি চাকমা বলেন, ‘প্রকল্পটি যখন নেওয়া হয়েছিল, তখন পলিমার বিটুমিন আমদানির জটিল বিষয়টি সেভাবে আলোচনায় আসেনি। ধারণা ছিল পলিমার বিটুমিন আমদানির শর্তে সরকারের বিশেষ ছাড় পাওয়া যাবে।

‘বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পিএমবি ব্যবহার হচ্ছে। বিটুমিনের সঙ্গে প্ল্যাস্টিক মেশানের কারণে তা অধিক তাপমাত্রায়ও গলে যায় না। এতে সড়ক টেকসই হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া বিএসটিআই, বুয়েট এবং ইষ্টার্ণ রিফাইনারিতে সহজেই বিটুমিন টেস্টের ল্যাব স্থাপন করা যাবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্ত এসব সংস্থা এ ধরনের ল্যাব স্থাপন করতে পারেনি।’

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে উল্লেখিত তিন সংস্থার যেকোনো একটির ল্যাবে আমদানি করা পলিমার বিটুমিন পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হলেও এসব সংস্থাকে ল্যাব স্থাপনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

ইষ্টার্ণ রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান বলেন, সরকারের উচ্চ মহলের কোনো নির্দেশনা না থাকায় আপতত পিএমবি পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

ছয় মাসের আমদানি শিথিলকরণ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষরকারী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, তারা জানতেন বুয়েট টেস্ট পরিচালনা করতে যাচ্ছে, কিন্তু ইষ্টার্ণ রিফাইনারি ওই সময় তা করতে পারেনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ছয় মাস সময় দিয়েছি। আমরা চাই তারা যত দ্রুত সম্ভব ল্যাব স্থাপন করুক। তবে এ কাজের জন্য তাদের বাজেট, জনবল ও বিশেষজ্ঞ থাকতে হবে। তাড়াহুড়া করা যাবে না। আশা করি কাজটি শীঘ্রই করা হবে। আমরাও কাজটি করার জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সময় দেব।’

বুয়েটের ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবের ইনস্ট্রাক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বুয়েটের ল্যাবে সাধারণ বিটুমিনের পরীক্ষা করা হয়। পলিমার বিটুমিন পরীক্ষার সুযোগ এখানে নেই। এ-সংক্রান্ত যন্ত্রপাতিও নেই। তবে পলিমার বিটুমিন পরীক্ষার লক্ষ্যে এ ল্যাবটির আরো অধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী অর্থবছরে এই ল্যাব স্থাপনের বরাদ্দ পাওয়া যাবে।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওয়ালিউর রহমান বলেন, বিভিন্ন দেশে পলিমার বিটুমিনের সড়ক জনপ্রিয় হচ্ছে। অধিক তাপমাত্রায় এই বিটুমিটন গলে যায় না্। এতে সড়কে ‘রাটিং’ (চাকার দাগ বসে গিয়ে এবড়োখেবড়ো খাঁজ সৃষ্টি হওয়া) হয় না।

ভারতের এক্সপ্রেসওয়েসহ সব বড় মহাসড়কে এ বিটুমিন ব্যবহার হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পিএমবি ব্যবহারের কিছু পরিবেশগত উপকারিতাও আছে।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, পলিমার বিটুমিনের তিন ধরনের সুফল পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার হওয়ার কারণে এটি পরিবেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এছাড়া যারা এসব প্লাস্টিক সংগ্রহ করে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হয়। আবার পলিমার ব্যবহারের কারণে টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পলিমার বিটুমিন

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ১৯২.৩ কিলোমিটার সড়কের জন্য পলিমার বিটুমিনের প্রয়োজন হবে ২৮,০০০ টন। শর্ত শিথিলের পর এ পর্যন্ত আমদানি হয়েছে ৮,৫০০ টন পিএমবি।

আগস্টের মাঝামাঝির পর ফের আমদানি করা পিএমবি টেস্টিং বাধ্যতামূলক করা হতে পারে। এ অবস্থায় শুধুমাত্র বিটুমিন আমদানির জটিলতায় আবারও প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ আটকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ১২৫.৯ কিলোমিটারের কাজ পেয়েছে স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এসএম মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে আমদানি করতে না পারায় এখন অনেক বেশি দামে পলিমার বিটুমিন কিনতে হচ্ছে। দুবাই থেকে আমদানি করা প্রতি টন পলিমার বিটুমিনের দামে ৪০ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে। এ অবস্থায় মূল্য সমন্বয় করা না হলে বিনিয়োগ উঠে আসবে না, লোকসান দিতে হবে।’

তিনি জানান, ‘মহাসড়কের কুমিল্লা অংশের জন্য ১৮,০০০ টন বিটুমিন আমদানি করতে হবে। এখন পর্যন্ত আমাদানি করা হয়েছে ৭,০০০ টন। এদিকে আমদানির শর্ত আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে। এর পর আমদানিতে আবার জটিলতায় পড়তে হবে এবং নতুন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমিতর অপেক্ষা থাকতে হবে।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম অংশের জন্য পিএমবি প্রয়োজন ১০,০০০ টন। এখন পর্যন্ত আমদানি হয়েছে মাত্র ১,৫০০ টন।

অপরিকল্পিত প্রকল্প প্রস্তাব

বিটুমিন আমদানির সমস্যাতেই জটিলটার শেষ নয়।

দীর্ঘ দিন সংস্কার না হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আনডিউলেশন ও রাটিংও বেড়ে গেছে ব্যপকভাবে। কিন্ত সংস্কারকাজে যেসব নির্মাণসামগ্রী প্রয়োজন, তা প্রকল্প প্রস্তাবে ধরা হয়নি।

এ অবস্থায় আনডিউলেশনগুলো মেরামতের আইটেম অন্তর্ভুক্ত করে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক সুনীতি চাকমা বলেন, ‘প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির সময় আনডিউলেশনের বিষয়টি সঠিকভাবে তুলে আনা যায়নি। এ কারণে বাস্তবায়ন পর্যায়ে গিয়ে এ সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। এ অবস্থায় আনডিউলেশনগুলো মেরামতের আইটেম প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কিন্ত কত কিলোমিটার আনডিউলেশন রয়েছে, তা আগে পরিমাপ করতে হবে। সে অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রী কিনতে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করতে হবে।’

চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘আলোচ্য প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম অংশের ৬৬ কিলোমিটারের মধ্যে ৪৮ কিলোমিটারের রাটিং আছে। রাটিংগুলো মেশিন দিয়ে কেটে সমান করা হবে। কিন্ত দেখা যাচ্ছে রাটিংগুলো মিলিং মেশিন দিয়ে কাটার পর আনডিউলেশন থেকে যাচ্ছে। এই অবস্থায় রাটিংগুলো ঠিক না করে মেরামতের কাজ করলে এর কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।’

এসব সমস্যার সমাধান হওয়ার আগপর্যন্ত ব্যবসাসহ যাত্রীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হবে।

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রুস্তম আলী খান বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম চাল লেনের সড়ক নির্মাণ করা হলেও এটি আন্তর্জাতিক মানের হয়নি। চার লেনে উন্নীত করার অল্প দিনের মধ্যে অনেক স্থানে গর্ত তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, এই রাস্তার ওপর দিয়ে গাড়ি চলতে গিয়ে গাড়ির ক্ষতি হয়। এছাড়া যানজটও তৈরি হয়। এতে আর্থিক ক্ষতির মূখে পড়তে হয়।

রুস্তম আলী খান বলেন, ‘এই মহাসড়ক মেরামতের প্রকল্প নেওয়া হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। দেশের ব্যস্ততম এই মহাসড়ক মেরামতের কাজ সময়ের মধ্যে করা উচিত ছিল।’

নিট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘মহাসড়ক মেরামত ডে বাই ডে করতে হবে। এটা দীর্ঘ দিন জমিয়ে রাখলে সড়কে যানজট, ভোগান্তি বাড়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে যানজট বাড়লে আমদানি-রপ্তানি প্রভাবিত হয়। শুধু প্রকল্প নিয়ে ফেলে রাখলে প্রকল্পের ভোগান্তির সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ে।’

বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমিরুল হকও একই মত প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘মহাসড়কের বেহাল দশায় মানুষের ভোগান্তি ও ব্যবসার খরচ বেড়েছে। এটি আর কিছু না, কর্তৃপক্ষের অবহেলা।’

সড়ক প্রযুক্তিতে জনপ্রিয় হচ্ছে পিএমবি

পলিমার মডিফাইড বিটুমিন হলো বিটুমিন ও পলিমারের মিশ্রণ। অতিরিক্ত শক্তি ও স্থিতিস্থাপকতা এবং তাপ, তুষারপাত ও বিকৃতির বিরুদ্ধে উচ্চ প্রতিরোধশক্তির কারণে এটি ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বব্যাপী ব্যবহৃত হয়ে আসছে বলে জানাচ্ছে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাগুলোর গবেষণা।

রাশিয়ার গাজপ্রমের এক প্রতিবেদন অনুসারে, পিএমবি দিয়ে তৈরি সড়ক ১২ বছর মেয়াদের কার্যক্রম চলাকালীন রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ৩২ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারে।

যানবাহনের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়ছে যানবাহনের চাপ ও টায়ারের চাপ। ফলে দ্রুত নষ্ট হচ্ছে সড়ক। এই পরিস্থিতিতে অন্তত তিন দশক ধরে রাস্তার প্রযুক্তিতে জনপ্রিয় বিকল্প হয়ে উঠেছে পিএমবি। এটি ব্যবহারের ফলে সড়কে রাটিং, ফাটল ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কমে।

আগামী পাঁচ বছরে পিএমবির বৈশ্বিক বাজারের প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৪ শতাংশ। ২০২৪ সালে এর বাজারের ১০.৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান মার্কেটওয়াচ এ তথ্য দিয়েছে।

পলিমারিক বিটুমিনের ব্যবহার শুরু হয় ১৯৭০-এর দশকে, ইউরোপের সড়ক প্রযুক্তিতে। আর ১৯৮০-র দশকের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রে এর ব্যবহার বাড়ে।

বাংলাদেশের সড়কের ফাটল দিয়ে পানি প্রবেশ করে আটকে যায়। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে বিটুমিন দিয়ে নির্মাণ করা পাকা রাস্তাগুলোর ওপর। বিটুমিনের সঙ্গে পলিমার যোগ করা হলে এ সমস্যা অনেকটাই কমতে পারে বলে একমত হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়াররা।- দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড