ঢাকারবিবার , ১০ এপ্রিল ২০২২
  • অন্যান্য

শূন্য থেকে উঠে এসে প্রধানমন্ত্রী: একনজরে ইমরানের উত্থান-পতন

এপ্রিল ১০, ২০২২ ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ । ১২২ জন

ইমরান খান তার শপথের সময় বড় বড় সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে তিনি পাকিস্তানের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হন।

বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার অধিনায়ক হিসেবে নিজের দেশকে জিতিয়েছিলেন বিশ্বকাপের ট্রফি। ১৯৯২ সালের সেই বিশ্বকাপের কয়েক বছর পরই নিজের রাজনৈতিক দল চালু করেছিলেন ইমরান খান। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন লাহোরে জন্ম নেওয়া এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। তবে পাকিস্তানের ‘ঐতিহ্য’ বজায় রেখে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঁচবছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ইমরানকে ছাড়তে হল গদি। জানুন ইমরানের রাজনৈতিক উত্থান ও পতনের কাহিনী।

১৯৯৬ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইমরান খান। তবে প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানের রাজনীতিতে খুব বেশি দাগ কাটতে পারেনি তার দল। ১৯৯৭ ও ২০০২ সালে ইমরানের দল পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে খুব বাজেভাবে হেরে যায়।

ক্রিকেটার হিসেবে অবসর নেওয়ার আগেই ইমরান খানকে বেশ কয়েকবার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ জিয়া-উল-হক ইমরান খানকে পাকিস্তান মুসলিম লিগে (পিএমএল) যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। নওয়াজ শরিফও ইমরানকে তার দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে ইমরান উভয় প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

ইমরান খানের দল ২০০৮ সালের নির্বাচন বয়কট করেছিল। কারচুপির অভিযোগ তুলে ইমরান নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। এরপর ২০১৩ সালের নির্বাচনে পিটিআই পাকিস্তানের অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পিটিআই ভোটের নিরিখে পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল এবং জয়ী আসনের নিরিখে তৃতীয় বৃহত্তম দল হয়।

বিরোধী দলের নেতা হিসাবে ইমরান খান জনসাধারণের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে ‘আজাদি মার্চ’ শুরু করেছিলেন ২০১৪ সালে। সরকারের বিরোধিতায় ১২৬ দিন ধরে ইসলামাবাদে ধরনায় বসেছিলেন ইমরান ও তার দলের কর্মী, সমর্থকরা।

২০১৮ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ইমরান খানের দল বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসে। সেই নির্বাচনে তারা ১৪৯টি আসনে জয়লাভ করে। এবং শরিকদের সঙ্গে নিয়ে সরকার গঠন করে। তাছাড়া পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলি, খাইবার পাখতুনখোয়া, গিলগিট বালতিস্তান এবং কাশ্মীর অ্যাসেম্বলিতে ইমরান খানের দল এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ।

ইমরান খান তার শপথের সময় বড় বড় সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাকিস্তানকে একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করবেন বলে দাবি করেছিলেন। তবে তিনি পাকিস্তানের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ব্যর্থ হন। দেশে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়তে থাকে। বেকারত্বের হার, মূল্যস্ফীতির হারও ঊর্ধ্বমুখী। আল-কায়দা জঙ্গি ওসামা বিন লাদেনকে ‘শহিদ’ আখ্যা দিয়ে বিতর্কে জড়ান। আফগানিস্তানের পালাবদলের সময় তালেবানদের পক্ষে সওয়াল করেন ইমরান।

এই আবহে ১০ এপ্রিল ভোর রাতে পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ১৭৪-০ ভোটের ব্যবধানে আস্থা ভোটে হেরে গদিচ্যুত হলেন ইমরান খান। এর আগে তিনি সরাসরি এক মার্কিন কূটনীতিক ডোনাল্ড লু-র নাম নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন যে তার রাশিয়া সফরের কারণে আমেরিকা তার সরকার নামাতে চেয়েছে। পাক সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয় এই পরিস্থিতিতে। মামলা পৌঁছায় পাক সুপ্রিম কোর্টে। শেষে সুপ্রিম নির্দেশে আস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়। গদিচ্যুত হন ‘ক্যাপ্টেন’।  – দি বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড