দেশ যাতে খাদ্য সংকটে না পড়ে সেজন্য দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং চলমান কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বাংলাদেশ যাতে কখনোই দুর্ভিক্ষ ও খাদ্যের অপ্রতুলতার মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি না হয়, সেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬’ প্রদান অনুষ্ঠানে আজ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মাটি ও মানুষ আছে। তাই এখন থেকেই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে, বাংলাদেশ যাতে কখনো দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকটে না পড়ে। আমরা আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়াব।’
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষাবাদের আওতায় এনে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। বিশ্ববাজারে প্রতিটি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহণ ব্যয় অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তাঁর সাম্প্রতিক যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানকালে উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে আলোচনায় আগামী বছর বিশ্ব ভয়াবহ খাদ্য সংকটের দিকে যেতে পারে বলে সকলের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথাও উল্লেখ করেন।
যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে উল্লেখ করে জাতিসংঘে প্রদত্ত ভাষণে তাঁর যুদ্ধ বন্ধ করার উদাত্ত আহ্বানের পাশাপাশি শিশুদের জন্য খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার পাশাপাশি উন্নত জীবন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বানের কথাও অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি না যে যুদ্ধ এত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ অস্ত্র বিক্রির কারণে যুদ্ধ চালিয়ে রাখতে পারলে কিছু দেশ লাভবান হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে শারমিন আক্তার বিজয়ীদের পক্ষে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাফল্য ও এর কার্যক্রমের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ, সমবায়, উদ্বুদ্ধকরণ, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, বাণিজ্যিক চাষ, বনায়ন, গবাদি পশু পালন এবং মাছ চাষে অবদানের জন্য ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬ প্রদান করেন। নির্বাচিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি স্বর্ণ, পঁচিশটি ব্রোঞ্জ এবং ষোলটি রৌপ্য পদক প্রদান করা হয়।
এনটিভি