ঢাকাসোমবার , ২ জানুয়ারি ২০২৩
  • অন্যান্য

বিনা মূল্যের বই নাগরিকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ : লিটন

জানুয়ারি ২, ২০২৩ ১২:৪৫ অপরাহ্ণ । ৯৭ জন

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ২০১২ সালে বাংলাদেশ বর্তমানের মতো এত উন্নত ছিল না। তবে সেই সময়েই সারা দেশে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়ার দুঃসাহসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিবছর বই তৈরি ও বাঁধাই করে ট্রাকে করে স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া সহজ কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী সেই কাজটি করে যাচ্ছেন সুনিপুণভাবে।

রোববার (১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীতে উৎসবমুখর পরিবেশে বই উৎসব দিবসে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনা মূল্যে নতুন বই বিতরণ করা হয়। অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক এই পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করে।



খায়রুজ্জামান লিটন আরও বলেন, এ বছর সরকার সারা দেশের ৪ কোটি ৯ লাখ শিক্ষার্থীদের হাতে প্রায় ৩৫ কোটি বই বিনা মূল্যে তুলে দিচ্ছে। আমি মনে করি এটি নাগরিকদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারলে তারা দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হবে। কাজেই সরকার এটা দেশবাসীর কল্যাণে বিনিয়োগ করছে।

নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সৌভাগ্যবান উল্লেখ করে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আগামী দিনে যারা দেশ ও জাতি গড়বে তাদেরকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে না পারলে তারা দেশের কাছে বোঝা হয়ে যাবে। তারা যাতে সম্পদ হয় সেজন্য তাদের হাতে সময়মতো বই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। দেশে এখন শিক্ষিতের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ। আমরা শতভাগ শিক্ষিত জাতিতে পরিণত হওয়ার অপেক্ষায় আছি।

এদিকে বছরের প্রথমদিন নতুন বই ও নতুন ক্লাসে উঠা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা গেছে।

রুবায়েদ জান্নাত সিজান নামের তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন বই। নতুন ক্লাস। মজাই আলাদা। তার সঙ্গে নতুন ড্রেস। ক্লাস শুরু হলে সবকিছু নতুন পরে স্কুলে আসবো। অনেক মজা হবে।

শিক্ষার্থীর অভিভাবক হুমায়রা জান্নাত বলেন, আমাদের সময় প্রাইমারিতে একসঙ্গে সব নতুন বই পাইনি। তিনটা নতুন, তিনটা পুরোনো বই পেতাম। তারপর আবার সেই বইগুলো যত্ন করে মলাট বাঁধাই করতাম। সেই দিনগুলো মনে পড়লে ভালোই লাগে।


জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, প্রাথমিক পর্যায়ে মোট ৩ লাখ ৫ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য বইয়ের চাহিদা রয়েছে ১৩ লাখ ১১ হাজারটি। এর বিপরীতে বই পাওয়া গেছে ৯ লাখ ৭০ হাজারটি। প্রাথমিক স্তরের নতুন বই মিলেছে ৭৪ শতাংশ।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির সব বই এসেছে। ৩য়, ৪র্থ এবং ৫ম শ্রেণির কিছু বই আসেনি।

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহা. নাসির উদ্দিন বলেন, সব মিলিয়ে ৫৪-৫৫ শতাংশ বই এসেছে। বইগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দেওয়া হচ্ছে। বাকি বই দ্রুত চলে আসবে বলে আশা করছি।

রাজশাহী কলিজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. নুরজাহান বেগম বলেন, আমাদের স্কুলেও শতভাগ বই নেই। আগামীকাল থেকেই ক্লাস শুরু হবে। বিশেষ করে নতুন কারিকুলামের ষষ্ঠ শ্রেণি ও ৭ম শ্রেণির বই এখনো হাতে পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, বই উৎসবের মাধ্যমে রাজশাহী জেলায় ৫ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে বই বিতরণ করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ৮০ ভাগ বই আমরা পেয়েছি। যে দু-একটা বই বাকি আছে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সেগুলো চলে আসবে।