৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে পুরো তুরস্ক। স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ঘটা এই ভূমিকম্পের কম্পন রাজধানী আঙ্কারাসহ তুরস্কের সব অঞ্চলে অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৯২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ৫৬ জন তুরস্কের এবং ৪২ জন পার্শ্ববর্তী দেশ সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশের।
তুরস্কের পুলিশ ও সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর এএফএডির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ৫৬ জনের মধ্যে ২৩ জন মালাতায়া, ১৭ জন সানলিউরফা, ৬ জন দিয়ারবাকির এবং ৫ জন ওসমানিয়া শহরের।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এক বিবৃতি অনুযায়ী, পর পর দু’টি ভূমিকম্প হয়েছে তুরস্কে। প্রথমটি হয়েছে ভোর ৪ টা ১৭ মিনিটে এবং সেটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮; দ্বিতীয়টি ঘটে তার ১৫ মিনিট পর। সেটি মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৭।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খারমানমারাসের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্প দু’টির উৎপত্তিস্থল। তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসে কম্পন অনুভূত হয়েছে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এএফপি।
গাজিয়ানতেপ সীমান্তের অপর প্রান্তে সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশ। সিরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমের সংবাদে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর প্রদেশের অধিকাংশ ভবন ধসে পড়েছে। ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হতাহতের আশঙ্কা আছে আলেপ্পোতেও।
তুরস্কের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ভরে উঠেছে ভূমিকম্পের ফলে গাজিয়ানতেপসহ বিভিন্ন শহরে ধসে পড়া ভবনের ভিডিওচিত্রে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তুপের নিচে বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন।
ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়াদের মধ্যে আহত ও নিহতের সংখ্যাও প্রচুর বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে তুরস্কের পুলিশ বা সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর এএফএডি এখন পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূমীকম্পপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো তুরস্ক। ১৯৯৯ সালে তুরস্কের দুজকে অঞ্চলে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই দুর্যোগে দেশটিতে মোট নিহতের সংখ্যা ছিল ১৭ হাজারেরও বেশি। একক শহর হিসেবে ইস্তাম্বুলে নিহতের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি— প্রায় ১ হাজার জন।
তারপর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় শহর এলাজিগে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪০ জন নিহত হন। একই বছর অক্টোবরে এজিয়ান সাগর উপকূলে ৭ মাত্রার আরও একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই দুর্যোগে নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছিল ১১৪ জনে।- ঢাকা পোস্ট