ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালের জাল এপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরির প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় আসামিদের কাছ থেকে জাল এপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরির কাজে ব্যাবহৃত একটি কম্পিউটার, কালার প্রিন্টার ও স্ক্যানার উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শেখ মো: এনামুল হাসান তাসিন (২০) ও মো: রায়হান কবির (২১)। এনামুল রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল মাস্টারপাড়ার শেখ মো: আবু সাঈদের ছেলে ও রায়হান কর্ণহার থানার শিশাপাড়ার মো: ইসরাইলের ছেলে।
আজ মঙ্গলবার আরএপির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার মোহনঘোষ এলাকার মো: হেলাল আলী নামের এক ব্যক্তি ভারতে যাওয়া জন্য গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় বোয়ালিয়া থানাধীন বর্ণালী মোড় INDIAN VISA অফিসে ভিসা প্রসেসিং-এর জন্য আসে। অফিসের সামনে অজ্ঞাতনামা একজনকে ভিসা প্রসেসিং-এর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে RAHMAN LIFE SOLUTIONS নামক একটি দোকান দেখিয়ে দেন। তিনি সেখানে গেলে আসামিরা তাকে বলে, ভিসা করতে হলে ভারতের হাসপাতালের এপয়েন্টমেন্ট লেটার-সহ বিভিন্ন কাগজপত্র লাগবে। তখন হেলাল আলী উক্ত কাগজপত্র কোথায় পাবো বললে আসামিরা জানায় ৩ হাজার ৫০০ টাকা দিলে তারা সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে দিবে এবং তাদের দেওয়া কাগজপত্র ভারতের হাইকমিশনারের অফিসে জমা দিলেই ভিসা পাবেন।
উক্ত কথার পরিপ্রেক্ষিতে হেলাল আলী তাদের ৩ হাজার ৪০০ টাকা প্রদান করেন। কিছুক্ষন পর আসামীরা ভিসা পাওয়ার আবেদন ও ভারতীয় ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট লেটার-সহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে ভিসা অফিসে জমা দিতে বললে হেলাল আলী উক্ত কাগজপত্র ভিসা অফিসে জমা দেন।
পরের দিন সকাল ১১ টায় হেলাল আলী খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন, আসামিদের দেওয়া ভারতীয় ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট লেটার জাল হওয়ায় তার ভিসা পাওয়ার কোন সম্ভবনা নাই। তখন সে আসামিদের কাছে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তারা বিভিন্ন তালবাহানা করে।
পরবর্তীতে হেলাল আলী গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানান।
উক্ত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর সোয়া ২ টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বোয়ালিয়া থানাধীন বর্ণালী মোড় INDIAN VISA অফিস সংলগ্ন RAHMAN LIFE SOLUTION’S নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে মো: এনামুল হাসান তাসিন ও মো: রায়হান কবিরকে গ্রেফতার করেন। এসময় আসামিদের কাছ থেকে জাল এপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরির কাজে ব্যাবহৃত একটি কম্পিউটার, একটি কালার প্রিন্টার ও একটি স্ক্যানার উদ্ধার হয়।
গ্রেফতারকৃতরা অজ্ঞাত ৪-৫ জনের সহায়তায় ভারতীয় ডাক্তারের জাল এপয়েন্টমেন্ট লেটার তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেয়।
অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।