বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় এক মাদরাসাছাত্রীকে উত্যক্ত ও শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় আলোচিত জব্বার শেখ হত্যা মামলার মূল আসামিসহ বাবা ও দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৬।
বুধবার (১০ মে) চিতলমারী থানার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শেখ লিয়াকত আলী জানান, আজ আসামিদের বাগেরহাট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। র্যাবের পক্ষ হতে ওই তিন আসামিকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- দেলোয়ার হোসেন ওরফে সবুজ মুন্সি (৩০), দ্বীন ইসলাম ওরফে আকাশ মুন্সি (২৬) ও তাদের বাবা ছত্তার ওরফে ডাবলু মুন্সি (৫৫)। হত্যাকাণ্ডের মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যশোর জেলার কোতয়ালী থানার সাখারিগাতী এলাকা হতে তাদের ৮ মে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, চিতলমারীর বড়বাক গ্রামের মাদরাসাপড়ুয়া এক কিশোরীকে গোড়ানালুয়া গ্রামের বখাটে দ্বীন ইসলাম মুন্সি, দেলোয়ার হোসেন ওরফে সবুজ মুন্সি উত্যক্ত করে আসছিল। গত ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ওই কিশোরী দর্জিবাড়ি থেকে বোরকা নিয়ে নিজের বাড়ি ফিরছিল। এসময় কিশোরীকে নানা প্রস্তাব দিতে থাকে তারা। এতে রাজি না হওয়ায় কিশোরীকে শ্লীলতাহানী ও চড়-থাপ্পর মারা হয়। কিশোরী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি পরিবারের কাছে জানায়।
এ ঘটনায় কিশোরীর স্বজন জব্বার শেখ দ্বীন ইসলামের বাড়িতে গিয়ে ওই ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন। এতে আসামিরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করে এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়।
এরপর গত ৫ মে সন্ধ্যার পর জব্বার শেখ ও তার শ্যালক রাজিব শেখ চিতলমারী থানাধীন কলিগাতী বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে দ্বীন ইসলাম, তার ভাই দেলোয়ার ও বাবা ডাবলু মুন্সিসহ তাদের সহযোগীরা ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জব্বার শেখকে হত্যা করে। এ সময় জব্বারের সাথে থাকা রাজিব শেখ মারাত্মকভাবে আহত হন।
এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতা ওই আসামিদের তিনটি বসতঘর, তিনটি রান্নাঘর ও ইজিবাইক পুড়িয়ে ভস্মিভূত করে। এরপর গত ৮ মে চিতলমারীর ত্রিপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন। -কালের কণ্ঠ