ঢাকাবুধবার , ১০ মে ২০২৩

বানেশ্বরে গুটি আম কেনাবেচার মধ্যে দিয়ে মৌসুম শুরু

মে ১০, ২০২৩ ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ । ৯৫ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:


রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বনেশ্বর। গত ৪ মে থেকে আম কেনাবেচার সময় নির্ধারণ করা হলেও হাটে উঠেছিল না আম। ফলে এই হাটটিতে আম কেনাবেচা তেমন শুরু হয়নি। মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে হাটে অল্প কিছু আম কেনাবেচা করতে দেখা গেছে চাষী ও ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, আম কেনাবেচা শুরু হয়েছে।

আম ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম বলেন, এখনো পুরোদমে আম বানেশ্বর বাজারে উঠতে শুরু করেনি। পুরোদমে আম আসা শুরু হলে বানেশ্বর হাটে পা ফেলার জায়গা থাকবে না। এখনো মানুষের গাছের গুটি জাতের আম ঠিকমতো পাকেনি। কিছু কিছু পাকা শুরু হয়েছে। যেগুলো পাকা শুরু হয়েছে সেই আমগুলো মানুষ বাড়িতে খাচ্ছেন ও বিক্রি করছেন।

তিনি আরো বলেন, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মাত্র দুইজন আম বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে একজন আমার কাছে বিক্রি করেছেন। অন্যজনের সঙ্গে দর-দামে মেলেনি তাই আম কেনা হয়নি।

দুর্গাপুর উপজেলার আমগাছী এলাকা থেকে তিনটি প্লাস্টিকের ঝুড়িতে ভ্যান গাড়িতে আম নিয়ে বানেশ্বর হাটে এসেছেন সাজ্জাদ হোসেন। সাজ্জাদ হোসেন বলেন, গাছের মাথার উপরে কয়েকটা করে আম পাকা দেখা দিয়েছে। সেই আম এখনও পুরোপুরি মিষ্টি হয়নি। টক টক ভাব আছে। দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে তাই বিক্রি করলাম। তিনটি প্লাস্টিকের ঝুড়ির আম বিক্রি করলাম ৩ হাজার ৩০০ টাকায়। একটি প্লাস্টিকের ঝুড়ির আমের দাম পড়লো ১ হাজার ১০০ টাকা। আঁটি হলেও আমের দাম ভাল পেয়েছি।

আচারের জন্য আম কিনে ঢাকায় পাঠান আব্দুস সালাম। তিনি বানেশ্বরের খুঁটিপাড়ার বাসিন্দা। আব্দুস সালাম বলেন, আমরা গুটি বা আঁটি আম কিনি। তারপর সেগুলো ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। সেখানে আচার তৈরি হয়। গুটি বা আঁটি আম সাধারণত বেশি টক ও হালকা মিষ্টি হয়। আবার কোনো কোনো আম টক হয়। সেই টক আমের আচার ভালো হয়। চাহিদাও ভালো।

তিনি বলেন, এ বছর একটা আমও ঢাকাতে পাঠাতে পারিনি। মনে করেছিলাম আজ পাঠাবো। কিন্তু আজ হাটে আম নেই। আশা করছি আগামি শনিবার থেকে পুরোদমে বানেশ্বর বাজারের হাট জমে উঠবে। সেই দিন থেকে গুটি ছাড়াও অন্য জাতের আম পাওয়া যাবে।

অপরদিকে, আমপাড়ার কাজে ব্যবহার হওয়া ঝোপা ও ক্যারেট বিক্রি শুরু হয়েছে। আমের মৌসুমকে ঘিরে গত সপ্তাহ থেকে বিক্রি বেড়েছে এই পণ্যগুলোর। ব্যবসায়ী মেহদী হাসান বলেন, কেবল তো আমের মৌসুম শুরু হলো। এখনো পুরোদমে জমেনি। এখানে ৪০ থেকে ৮০ টাকা দামের আম রাখা ও নামানোর ঝোপা বিক্রি করা হচ্ছে।

বানেশ্বর হাটের আম ব্যবসায়ী রাজু আহম্মেদ বলেন, আজ দুই একজন আম নিয়ে এসেছেন। বেশি আম আসেনি। আশা করা যাচ্ছে আগামী হাট থেকে বেশি আম উঠবে।

বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই একজন আম নিয়ে আসছে হাটে বিক্রির জন্য। তবে এখনো পুরোদমে আমের হাট বসেনি। হাটে আম নেই। তাই ক্রেতা বিক্রেতাও নেই। আশা করা যাচ্ছে আগামী শনিবার (হাটবার) থেকে আমের হাট জমতে পারে।

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষি প্রকৌশলী ড. খো. হাবিবুল আলম বলেন, গুটি আমের সাধারণত কোনো নাম বা জাত হয় না। এই আমগুলো অন্য আমের চেয়ে আগাম পাকে। আকারেও অনেকটাই ছোট হয়। দেশে সাধারণত ক্ষীরশাপাত, হিমসাগর ও গোপালভোগ আমগুলোকে ভালো জাতের হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এই আমগুলো দেরিতে পাকে এবং খেতেও মিষ্টি। আমাদের দেশে কয়েক ধরনের গুটি আম পাওয়া যায়। যার মধ্যে কালোয়া ও বৈশাখী অন্যতম।

Paris