ঢাকাবুধবার , ১৭ মে ২০২৩
  • অন্যান্য

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আশিকের পাশে ইউএনও শাহাদাত

মে ১৭, ২০২৩ ৫:০৫ অপরাহ্ণ । ৫১ জন

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার খট্টেশ্বর গ্রামের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আশিক হোসেন ধ্রুবর পাশে সহযোগিতার বার্তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পড়ালেখার সহযোগিতা হিসেবে নিজ উদ্যোগে বুধবার বিকেলে ১৩ হাজার টাকা মূল্যের একটি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোন আশিকের মা সামিনা বিবির হাতে উপহার হিসেবে তুলে দিয়েছেন ইউএনও।

আশিক সদর ইউনিয়নের খট্টেশ্বর গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। সে সিরাজগঞ্জ এসবি রেলওয়ে স্কুল এন্ড কলেজে নবম শ্রেণীতে মানবিক বিভাগের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী।

আশিক হোসেন ধ্রুব জানান, তাদের পরিবারে দুই ভাই ও দুই বোন। সে ছাড়াও তার আরও এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বোন রয়েছে। সে বর্তমানে চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে অনার্স থার্ডইয়ারে অধ্যায়নরত। তার বড় ভাই ভ্যানচালক এবং আর এক বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই আর্থিক সমস্যার কারণে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে তাকে। তাদের ব্রেইল পদ্ধতির লেখাপড়ায় অনেক খরচ। আবার তাদেরকে অনেক দূরে দূরে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়েছে। সে রাজশাহী পিএইচটিসি সেন্টার থেকে ২০১৯ সালে পিএসসি পাশ করেন। এরপর থেকে হাইস্কুল জীবনে তার অনেক খরচ যোগাতে পরিবারকে হিমশিম খেতে হয়।

২০২০ সালে এসে তার ভ্যানচালক বাবাও মারা যান। যিনি ছিলেন তাদের পরিবারের একমাত্র উর্পাজনকারী ব্যক্তি। এরপর থেকে বড় ভাই ভ্যান চালিয়ে আর মা মানুষের বাড়িতে কাজ করে যে আয় করেন, সেই অর্থ দিয়েই নিজেদের প্রয়োজন পূরণের পর তার লেখাপড়ার খরচ যোগান দিয়ে আসছে মা ও ভাই। আর বড় বোনের লেখাপড়ার খরচ একটি সংস্থা দিয়ে আসছেন। বর্তমানে ঊর্ধ্বগতির বাজারে তার চলাফেরার খরচ, স্কুলের ফি, পরীক্ষা ফি এবং অন্যান্য ফি, কাগজপত্র, লেখার সরঞ্জামাদিসহ যাবতীয় খরচ যোগান দেওয়া পরিবারের পক্ষে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হচ্ছে তার মা ও ভাইকে। এমতাবস্থায় সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে, সেই সহযোগিতায় উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বড় হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হতো আশিকের।

আশিক তার আগামীর স্বপ্ন নিয়ে আরও বলে- আমি বড় হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করতে চাই। সমাজ ও আমার মতো মানুষদেরকে নিয়ে কাজ করতে চাই। তার মতো গরীব-অসহায় পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের স্বপ্ন পূরণে দেশের বিত্তবানরা একটু সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসবেন এমনই আহবান তার।

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের লেখাপড়া অনেক ব্যয়বহুল। তাই আশিকের মা তার ছেলের পড়ালেখার সহযোগিতা হিসেবে একটি অ্যানড্রয়েড মোবাইল ফোনের আবেদন করেছিল। তারই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদের তহবিল থেকে অর্থের যোগানের ব্যবস্থা করে নিজ উদ্যোগে ফোনটি আশিককে উপহার দিয়েছি। ইউএনও আরও বলেন, কোন প্রতিবন্ধীই কারো বোঝা নয়, যদি তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে গড়ে তোলা সম্ভব হয় তারাও দেশের জন্য সম্পদে পরিণত হতে পারে।

Paris