ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৬ অক্টোবর ২০২৩
  • অন্যান্য

অপরাধী আটক, দেহ তল্লাশি ও মালামাল জব্দের ক্ষমতা পাচ্ছে না আনসার

অক্টোবর ২৬, ২০২৩ ৮:৩৬ অপরাহ্ণ । ১৪১ জন

অপরাধী আটক, দেহ তল্লাশি ও মালামাল জব্দের ক্ষমতা পাচ্ছে না আনসার ব্যাটালিয়ন। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ৩৫তম বৈঠকে বিলের ৭ ও ৮ ধারাসহ কয়েকটি সংশোধনী আনার সুপারিশ করা হয়।

একাদশ জাতীয় সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকে কমিটির সদস্য ও আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. আব্দুল মজিদ খান, গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশগ্রহণ করেন।

গত ২৩ অক্টোবর ‘আনসার ব্যাটালিয়ন বিল, ২০২৩’ সংসদে তুলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সংসদে উত্থাপিত ওই বিলের ৮ ধারায় আনসার ব্যাটালিয়নকে অপরাধী আটক ও তল্লাশির ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

বিলে বলা হয়েছিল, কোনও ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে অপরাধীকে আটক করে অবিলম্বে পুলিশের কাছে সোপর্দ করবে। ক্ষেত্রমতো জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশক্রমে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি, কোনও স্থানে প্রবেশ ও তল্লাশি এবং মালামাল জব্দ করতে পারবে।

সংসদে উত্থাপিত বিলের ৭ ধারায় বলা হয়েছিল, আনসার ব্যাটালিয়নের দায়িত্বের ক্ষেত্রে বলা হয়েছিল, জননিরাপত্তামূলক কোনও কাজে সরকার বা সরকারের অনুমোদনক্রমে সরকারি কোনও কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী দায়িত্ব সম্পাদন করবে। এখানে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে ‘দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে’। সংসদে তোলার পর বিলটি পরীক্ষা করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলের এই ধারায় সংশোধনী আনার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। এই ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যাটালিয়ন সদস্যের সামনে সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

কমিটি সূত্র জানায়, এই প্রস্তাবটি এসেছে পুলিশের পক্ষ থেকে। সংসদে উত্থাপিত বিলে আনসার বাহিনীতে বিদ্রোহের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড উল্লেখ করা হয়েছিল। সংসদীয় এক্ষেত্রে ‘মৃত্যুদণ্ড’ বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে সভাপতি বেনজীর আহমেদ  বলেন, ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সংশোধনীর প্রস্তাব এসেছে। একটা আইন আছে, ওই আইনের ধারায় তারা পরিচালিত হবে। এখতিয়ার ও ক্ষমতার ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে।

বৈঠকের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সব পর্যায়ের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জীবন উৎসর্গকারী শহিদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়। সেই সাথে কমিটির প্রয়াত সদস্য অ্যাড. শাহজাহান মিয়ার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।

জেলা (পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাসমূহে বলবৎকরণ) বিল, ২০২৩ অবিকৃতভাবে সংসদে উত্থাপনের জন্য বৈঠকে সুপারিশ করা হয়।

বৈঠকে ‘বৈষম্য বিরোধী বিল, ২০২৩’ এর উপর আলোচনায় কমিটি কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, পরবর্তী বৈঠকে বিলটির উপর আলোচনা ও রিপোর্ট প্রদান করা হবে।

বৈঠকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রাইজিংবিডি