সরকারি হিসাবে দেশে ১৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সি মানুষদের মধ্যে এখন বেকার সংখ্যা ২৫ লাখ ৮২ হাজার। এর মধ্যে ১৫-২৪ বয়সি ১৬ লাখ ৮৯ হাজার জন। এছাড়া ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সিদের মধ্যে বেকার রয়েছেন ৮ লাখ ৯৩ হাজার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়। এর আগে প্রাথমিক প্রতিবেদনে বেকার সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ ৯০ হাজার। সে তুলনায় চূড়ান্ত হিসাবে বেকার কমেছে ৮ হাজার।
প্রতিবেদন প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, জরিপের ফলাফলগুলো আমাদেরকে শ্রম বাজারের বিশ্লেষণের জন্য ইনপুট দেবে। এর মাধ্যমে সরকারের নেওয়া কর্মসূচিগুলোর অগ্রগতিও পর্যবেক্ষণ করা যাবে। এই জরিপে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, সেগুলো শ্রম বাজার উন্নয়নের চিত্রের প্রতিফলন ঘটায়। এসব তথ্য নীতিনির্ধারক, পরিকল্পনাবিদ, গবেষক ও অন্যান্য ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করতে পারবে। কার্যকর পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ জরিপের তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবকদের মধ্যে বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। এ সংখ্যা ১৬ লাখ ৮৯ হাজার। এছাড়া যাদের বয়স ২৫-৩৪ বছর তাদের মধ্যে বেকার আছে ছয় লাখ ২৫ হাজার এবং যাদের বয়স ৩৫ বা এর উপরে তাদের মধ্যে বেকার দুই লাখ ৬৮ হাজার জন।
এদিকে দেশের মোট বেকারের মধ্যে পুরুষ হচ্ছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ এবং মহিলা বেকার নয় কোটি ২৬ লাখ। শহরের চেয়ে গ্রামে বেকার বেশি রয়েছে। গ্রামে বেকার রয়েছে ১৮ লাখ ১৩ হাজার আর শহরে সাত লাখ ৬৯ হাজার জন বেকার।
২০২২ সালের হিসাবে যারা বেকার ছিলেন, তাদের মধ্যে এক লাখ ৫৩ হাজারের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্নকারী বেকার হলো তিন লাখ ২২ হাজার। মাধ্যমিক স্তর পাশ করা বেকার সাত লাখ ৩৯ হাজার। উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পাশ করা পাঁচ লাখ ৩৬ হাজার, বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা সাত লাখ ৩৯ হাজার এবং অন্যকোনো মাধ্যমে শিক্ষা নিয়েছেন শূন্য দশমিক ৩৩ শতাংশ বেকার।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেন, শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২ এর মাধ্যমে শ্রমবাজার তথ্যের উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালিত হয়েছে। এই জরিপটি ১৯তম ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব লেবার স্ট্যাটিসটিকসের (আইসিএলএস) দেওয়া নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালনা করা হয়।
বাংলাদেশ সরকার ও অংশীজনদের চাহিদা অনুযায়ী বিস্তারিত এবং হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রস্তুতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কিত সরকারের বাস্তবায়িত কর্মসূচিগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য স্বল্প ব্যবধান ও নিয়মিত তথ্য পাওয়া জরুরি। বিবিএস শ্রমবাজার সম্পর্কিত সব ধরনের সূচকে সন্নিবেশ করে শ্রমশক্তি জরিপ করেছে।
যুগান্তর