তাপপ্রবাহে রাজশাহীর আকাশ থেকে যেন আজ আগুন ঝরাচ্ছে সূর্য। তীব্র তাপদাহে কাহিল হয়ে পড়েছে রাজশাহীর জনজীবন। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ উঠছে, কোনোভাবেই আর নিচে নামছে না। এমন অবস্থায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে পদ্মা পাড়ের রাজশাহী জনজীবন। রোদে কোথাও স্বস্তি নেই।
এরই মধ্যে শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বলেন, সামান্য বিরতি দিয়ে থার্মোমিটারে তাপমাত্রার পারদ আজ ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে ঠেকেছে। চলতি মৌসুমের এটিই রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল দীর্ঘ ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ রহিদুল ইসলাম বলেন, ভারি বৃষ্টিপাত ছাড়া চলমান তাপপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে আপাতত বৃষ্টিপাতেরও কোনো পূর্বাভাস নেই। আর কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা এই তাপমাত্রা ৪০/৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশেই থাকার আশঙ্কা আছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে, ঠাঠা রোদে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। পদ্মাপাড়ের তপ্ত বালু উড়ে এসে শরীরে বিঁধছে আগুনের হল্কার মতো। মাথার ওপর নীল আকাশটা যেন তপ্ত কড়াই হয়ে উঠেছে। দুপুর গড়াতেই পথ-ঘাট ও ভবনের দেয়াল ও আসবাবপত্রও তেঁতে উঠছে।
তীব্র খরার কবলে পড়ে হু হু করে নেমে যাচ্ছে রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর। অবর্ণনীয় এক নিদারুণ কষ্টে একেকটি দিন-রাত পার করছেন এ অঞ্চলে খেটে খাওয়া দিনমজুররা। মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও গরমে হাঁসফাঁস করছে। অচল হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বৃষ্টির জন্য চারিদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। রোদ-গরমে খা খা করছে মহানগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী জুড়ে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। প্রখর রোদ-গরমে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে মাইকিং করে সতর্কও করা হচ্ছে।