ঢাকামঙ্গলবার , ৫ এপ্রিল ২০২২
  • অন্যান্য

দুই বছর পরে রাজশাহীতে দোকানগুলোতে ইফতার কেনার আমেজ

এপ্রিল ৫, ২০২২ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ । ৮৯ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বিধিনিষেধ নেই, করোনার চোখ রাঙানিও কম। তাই দুই বছর পরে চিরোচেনা রূপে ইফতারির দোকান চেখে পড়ছে। দোকানগুলোতে বিকেলে থেকেই ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতারা পছন্দ মতো কিনছেন ইফতার। বরাবরের মতো এবছরও নগরীর বিভিন্ন ফুটপাত, দোকান ও রেস্তোরাঁয় বাহারি ইফতার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বেচা-কেনা করছেন বিক্রেতারা।

জানা গেছে, বিগত দুই রজমানে ফুটপাত, দোকান ও রেস্তোরাঁয় বিক্রি হয়নি ইফতার। সেই বছরগুলোতে করোনার প্রকোপ বেশি থাকায় মানুষ ঘরবন্দি অবস্থায় ইফতার করেছে। কারণে সেই সময়গুলোতে করোনা চোখ রাঙানি ছিল অধিক হারে। তাই বন্ধ ছিল সব ধরনের দোকানপাট। তার অংশ হিসেবে বাদ ছিলনা ইফতারের দোকানও। এবছর ফুটপাত, দোকানী ও রেস্তোরাঁসহ নগরীর মোড়ে মোড়ে দেখা যাচ্ছে ইফতারের দোকান।

রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী অমিত হাসান সাকিল জানান, করোনার কারণে আমরা বিগত দুই রমজান মাসে ঠিকমতো দোকান খুলতে পারিনি। অনেক সময় চুরি করে দোকান খুললে জারিমানার কবলে পড়তে হয়েছে। সবমিলে ব্যবসা হয়নি। এবছর স্বাচ্ছেন্দে ইফতার বিক্রি করতে পারছি। আর ক্রেতারা পছন্দের ইফতার কিনতে পারছেন। সবমিলে রমজানের একটা আমেজ বিরাজ করছে।

সোমবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে কোর্র্ট বাজার, গুড়িপাড়া, সিএন্ডবি মোড়, কুমারপাড়া, সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট, গণকপাড়া মোড়, সাগরপাড়া, নিউমার্কেট, উপশহর নিউমার্কেটে সড়কের ধারে ইফতার বিক্রি করতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানায়- আসরের নামাজের পরে তাদের ব্যবসা শুরু হয়। এসময় ক্রোদের ভীড় বেশি থাকে। চলে ইফতারের আগ মূহর্ত পর্যন্ত।

নগরীর কাজলা এলাকায় নাসির ও ছেলে মিলন ইফতারি সামগ্রী বিক্রি করছেন। তারা জানান, ইফতার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ছোলা, পিয়াজু, বুন্দিয়া, আলুর চপ, ডিমের চপ, মুড়ি, রসুনের চপ, কিমার চপ, জিলাপি, মাংসের চপ। রমজানের প্রতিদিন ভালো বিক্রি হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইফতারে বেশির ভাগ মানুষ ভাজা-পোড়া খাবার খোঁজে। তার সব আইটেম আমার দোকানে রয়েছে। গত বছর করোনার কারণে ইফতারের ব্যবসা করতে পারিনি। কিন্তু এবছর ভালো ব্যবসা হচ্ছে।

ইফতার ক্রেতা রাব্বি ইসলাম জানান, ইফতার কিনে পুলিশের গাড়ি দেখে পালানোর অভিজ্ঞাতা রয়েছে। যদিও ইফতার দেখে পুলিশ কিছু বলেনি। এবছর ইফতাদের দোকানগুলো দেখে মনে হচ্ছে রমজান মাস। যা বিগত বছরগুলোতে ছিল না। রমজানের আমেজ ইফতার কেনা-কাটা আরো বাড়িয়ে দেয়।

অন্যদিকে, ইফতারের তালিকায় শুধু পিয়াজু, বুট-বুন্দিয়ায় থাকে না; থাকে রহমানিয়া হোটেল, হাজী বিরিয়ানি হাউজ, তেহেরী ঘরহর অন্যান্য রেস্তোরাঁগুলোর মাটন লেগ রোস্ট, আস্ত মুরগির রোস্ট, মাসালা চিকেন, মাটন ভুনা, বিফ ভুনা, চিকেন ফ্রাই, দই বুন্দিয়া, বিফ আখনি, চিকেন আখনি, বোম্বাই জিলাপি, মুম্বাই চিকেন সমুচা, চিকেন টিক্কা কাবাব, জালি কাবাব ইত্যাদি আইটেম।
এবছরের রমজানে ইফতারের দোকান দিতে পেরে অনেক ব্যবসায়ী খুশি। রাজিব জানান, এবছর ইচ্ছে মত দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারছি। ক্রেতারাও ইচ্ছে মত জিনিস কেনা-কোটা করছে।

সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে ইফতারি কিনতে আসা উজ্জ্বল হোসেন জানান, এবারের রোজার প্রথম দিন ইফতারি কিনতে বেরিয়েছি। কোন নিয়ম মানতে হচ্ছে না। যেখানে খুশি সেখানে গিয়ে ইফতারি কিনতে পারছি। আনন্দের রোজা পালনে এবছর আমরা মুক্ত। ইফতারিগুলো যেন দুই বছরের দাম জমিয়ে রেখে এবছর প্রকাশ পেল। দাম বেশি রাখছেন দোকানিরা। তবে ইফতারি যত দামি হোক স্বাদের জন্য কিনতে হবেই।

ইফতার বিক্রেতা রহিদ জানায়, গত দুই বছর করোনার বিধিনিষেধ ছিল। তার আওতায় খাবার হোটেল বন্ধ ছিল। সেই সময় ব্যবসা করতে কষ্ট হয়েছে। ইফতার তৈরির পরেও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। অনেক দিন দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। কিন্তু এবছর রমজানে বিকেল থেকে শুরু হয় ইফতার বিক্রি। রাতের বেলায় পিয়াজু, বুট (ছোলা), জিলাপি বিক্রি হয়।