ঢাকাবুধবার , ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

বিসিবির ছাঁটাইয়ের আগে ডমিঙ্গোর পদত‌্যাগ

ডিসেম্বর ২৮, ২০২২ ৬:১৮ অপরাহ্ণ । ১১৬ জন

শেষ হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটে রাসেল ডমিঙ্গোর অধ‌্যায়। প্রবল আলোচনায় থাকা এ কোচ বিসিবির ছাঁটাইয়ের আগেই নিজ থেকে দিলেন পদত‌্যাগপত্র।

মঙ্গলবার রাতে ই-মেইলে বিসিবিকে নিজের পদত‌্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ডমিঙ্গো। এ খবর নিশ্চিত করেছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস। মুঠোফোনে তিনি বলেছেন,‘রাসেল পদত্যাগ করেছে। গতকাল রাতে ই-মেইলে সে জানিয়ে দিয়েছে আমাদের। আমরা তার লেটার গ্রহণ করেছি।’

তবে এসব বিষয়ে মুখ খুলতে রাজী হননি জালাল ইউনুস,‘ওর সঙ্গে আমাদের অনেক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। সেসব নিয়ে এখন আলোচনার কোনো মানে নেই। আমরা দুই পক্ষ নিজেদের সম্মান, অবস্থান ধরে রাখছি।’

বাংলাদেশে ক্রিকেটে রাসেল ডমিঙ্গো আলোচিত-সমালোচিত এক নাম। ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট বিসিবিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ডমিঙ্গো। বিসিবির হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) কোচ হিসেবে সাক্ষাৎকার দিতে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার প্রোফাইলে উচ্ছ্বসিত হয়ে বিসিবি থেকে দেওয়া হয় জাতীয় দলের কোচ হওয়ার প্রস্তাব। বেতন ধরা হয় মাসিক ১৫ হাজার ডলারের মতো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।

দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট হজম করে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ধাক্কা। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে হার। নতুন কোচ বলে সমালোচনায় বিদ্ধ হননি। কিন্তু দুই বছর পর তার নামের পাশে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে দেয় নীতিনির্ধারকরা।

তবুও বিসিবি তার উপর রাখে আস্থা। ২০২১ সালে দুই বছরের চুক্তি বাড়ানো হয় ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বেতনও বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ডলার। কিন্তু শেষ ছয় মাসে ডমিঙ্গোর আকাশে কালো মেঘ ছড়িয়ে পড়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগস্টে ডমিঙ্গোকে এই ফরম‌্যাটের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শুধু টেস্ট ও ওয়ানডের দায়িত্ব পালন করবেন সেই কথাই বলা হচ্ছিল।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশ স‌্যাটেল দল। বেশি নাড়াচড়ার সুযোগ নেই। কিন্তু টেস্টে দলের পারফরম‌্যান্স হতশ্রী। ডমিঙ্গো সেখানে উন্নতি করাতে পারছেন না। সেজন‌্য তাকে সরিয়ে দিতে বাধ‌্যই হয়েছে বিসিবি। তার বিদায় নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবি এখনও কিছু জানায়নি। তবে জালাল ইউনুস বলেছিলেন,‘আমাদের একজন কোচ দরকার, যে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য ভালো। ওয়ানডেতে আমরা ভালোই করছি। সেটার দিকে তাও নজর রাখা দরকার। কারণ, বিশ্বকাপ খুবই কাছে, ২০২৩ সালে। এটির দিকে নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি, আমরা চাই টেস্ট দলের টিম ম্যানেজমেন্টে যারা থাকবেন, তারা যেন ইম্প্যাক্ট রাখতে পারেন।’

পরিসংখ্যানের বিচারে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সফল কোচ তিনি। তার সময়েই নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়েছি, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদেরকেই ওয়ানডে সিরিজ হারিয়েছি। ভারতের দিল্লিতে জয় পেয়েছে টি-টোয়েন্টি ম‌্যাচে। সঙ্গে দেশের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়,  নিউ জিল‌্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। এছাড়া আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে ভালো অবস্থানে থেকে সরাসরি বিশ্বকাপের টিকিটও নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।

রাইজিংবিডি