ঢাকাশনিবার , ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • অন্যান্য

লাভজনক হওয়ায় রাজশাহীতে বেড়েছে স্ট্রবেরি চাষ

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩ ২:৩৭ অপরাহ্ণ । ২৫২ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহীতে বেড়েছে স্ট্রবেরির চাষ। গেল একবছরের তুলনায় জেলায় দুই হেক্টর বেশি জমিতে স্ট্রবেরির চাষ হয়েছে। কৃষি অফিস বলছে- উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা ভালো থাকায় চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়েছে স্ট্রবেরি চাষে। জানা গেছে, চারা রোপনের একমাসের মধ্যে ফল আসে স্ট্রবেরিতে। সেই ফল পাওয়া যায় কম পক্ষে চার থেকে পাঁচ মাস। এতে করে আর অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে লাভজনক বলছেন চাষীরা। গাছে স্ট্রবেরি আসলে দুই দিন পর পর তুলে বিক্রি করা যায়।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর (২০২১-২২) রাজশাহী জেলায় ১২ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়েছিল। যার গড় ফলন প্রতি হেক্টরে হয়েছিল ৭ দশমিক ৯ মেট্রিকটন। এছাড়া জেলার মোট ৮৯ মেট্রিকটন স্ট্রবেরি উৎপাদন হয়েছিল। এবছর (২০২২-২৩) রাজশাহী জেলায় ১৪ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়। যা গত বছরের চেয়ে দুই হেক্টর বেশি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়েছে। এ বছর জেলায় সম্ভাব্য ফলন ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২২৯ মেট্রিক টন প্রতি হেক্টরে। একইভাবে সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ১১৫ মেট্রিক টন। যদিও এখনও স্ট্রবেরি কৃষকের জমিতে রয়েছে।

পবার কিসমত কুখুন্ডী এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ করেছেন গোলাম মোস্তফা। মোস্তফা তিন বিঘা তিন কাটা জমিতে স্ট্রেবেরি চাষ করেছেন। তিনি জানান, কার্তিক মাসের ২০ তারিখে জমিতে স্ট্রবেরির চারা রোপন করা হয়। বর্তমানে ফলন ভালোই হচ্ছে। যা আশা করেছিলাম, তার থেকে ভালো স্ট্রবেরি পাচ্ছি। প্রতিবিঘাতে প্রতিদিন স্ট্রবেরি পাওয়া যায় ৭০ কেজি। এছাড়া এক বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করতে খরচ হয় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী ছাড়া ঢাকার কাওরান বাজার, বকশি বাজার, বাইপেল, চট্টগ্রাম ও সিলেটে পাঠানো হয়। প্রথম অবস্থায় ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম স্ট্রবেরি উঠেছে জমি থাকে। যদিও তখন দাম ছিল ১৫০০ টাকা কেজি। স্ট্রবেরিগুলো পৌষ মাসের ১৫ তারিখ থেকে তোলা শুরু হয়। বর্তমানে পাইকারি ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ফলন বেড়েছে। এই স্ট্রবেরির গাছ থেকে কম পক্ষে পাঁচ মাস ফল পাওয়া যাবে। ফল আসা শুরু হয়েছে- পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে। মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র। এই তিন মাস সবচেয়ে বেশি ফলন পাওয়া যাবে। তবে চৈত্রের শেষের দিকে কম হলেও স্ট্রবেরি পাওয়া যাবে। স্ট্রবেরি শেষ হবে বৈশাখে ১৫ দিনে।

তিনি আরো বলেন, এই জমি থেকে একদিন পর পর স্ট্রবেরি তোলা হয়। সেই দিনগুলোতে ৮ থেকে ১০ জন কাজ করেন। এছাড়া প্রতিদিন দুইজন শ্রমিক তার জমিতে কাজ করেন। এই শ্রমিকদের মজুরি স্ট্রবেরি বিক্রি করে দেওয়া হয়। সবমিলে স্ট্রবেরি চাষের পরে আর অন্য কাজ করতে হয় না তাকে। আগে যদিও চাকরি করেছেন। এখন সব ছেড়ে দিয়ে স্ট্রবেরির চাষ করছেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) শারমিন সুলতানা জানান, গত বছরের চেয়ে এবছর স্ট্রবেরি বেশি চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জেলায় স্ট্রবেরির চাষ ভালো হয়েছে।