স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাতে সংঘর্ষ থামলেও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংঘর্ষে রাবি শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, পুলিশ ও ব্যবসায়ীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।রোববার (১২ মার্চ) সকাল পর্যন্ত এই সংঘর্ষের ঘটনায় ৮৯ জন আহত হয়ে হাসপাতালে গেছেন।
এর মধ্যে রাবি শিক্ষার্থী রাকিব আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাবি ক্যাম্পাস এবং এর আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশের পাশাপাশি সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মাহামুদুল হাসান ফিরোজ জানান, সংঘর্ষ শুরু হলে শনিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকেই আহত রোগীরা হাসপাতালে আসতে থাকেন। সারারাতে মোট ৮৭ জন হাসপাতালে আসেন। এছাড়া রাতে আহত আরো দুজন রোববার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে হাসপাতালে আসেন।
তিনি আরো জানান, বেশিরভাগ রোগীই এসেছেন মাথায় জখম নিয়ে। মোট ৮৯ রোগীর মধ্যে ৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ৪৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। যারা ভর্তি আছেন তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা একটু বেশি খারাপ।
এদিকে, গতকাল রেলপথ অবরোধের কারণ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নির্ধারিত সময়ের প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে আন্তঃনগর ট্রেন ধূমকেতু এক্সপ্রেস। ট্রেনটি শনিবার (১১ মার্চ) দিনগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ত্যাগ করে। ট্রেনটি ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল ১১টা ২০ মিনিট। তবে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর থেকে ঢাকাসহ সকল রুটের ট্রেন নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে জানিয়েছেন স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম।
এ ঘটনায় রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আনিসুর রহমান নিজেই গভীর রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থান করেন। তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও বিনোদপুরসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই মামলা করেনি। তবে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শনিবার (১১ মার্চ) বিকেল পাঁচটা থেকে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। রাত প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনার পর সেখানে সাত প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।